পাগল মরলে বাত্তি জ্বলে
সাইয়েদ সুপ্ত
থানার সামনে একটা পুকুর ছিলো। শহুরে পুকুর ঠিক ডোবা আর পুকুরের মিশ্র জাত। দক্ষিণ পাড়ে বাঁধাই করা ঘাট। উত্তর এবং পশ্চিমে টুকটাক দোকান ছিলো, আর ছিলো টিনঘেরা গেসলখানা। দু-চারটে টয়লেটতো থাকবেই। শরীরে ময়লা জড়ানো সাবান ফেনা, কাপড় কাচার ছপছপ শব্দে ময়লা ছাড়ানো। সবার টাগের্ট ঐ পুকুর। এই জলের কোনো ব্যাবহার নাই।কেউ নামেনা কেউ ছুতে যায় না ঐ জল, একজন বাদে। তিনি নয়ন পাগলা। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি শহরের অলিগলিতে। খালি গয়ে থাকতেই তার পছন্দ বেশী। নিচেরদিকে মোটামুটি রকম খোলামেলাই থাকে। যা বুঝলাম সে মুসলিমজাতীয়। পাগলের আবার ধর্ম! দিনের কাজ মিটিয়ে ঐ পুকুরপাড়ের ঘাটে বসে পানি সেচ দিতে থাকতো। যেমনটা আমরা শৈশবে ছোট জলাশয় সেচতাম বাটি দিয়ে, মছের আশায় বা খেলাচ্ছলে । শহরের সবাই নয়ন পাগলাকে চিনে। এভাবে সবাই দেখে আসছে। একসময় নয়ন পাগলা মারা যায়। পুকুরের জল আস্তে আস্তে কমতে থাকে। গাঢ় সবুজ শ্যাওলাতে ফেনা জাগে। সত্য বলতে পুুকুরটাও মরতে বসে। তার কিছুদিন পরে বালু ফেলে ভরাট করা হয় থানা পুকুর।
মানুষের মুখে রটে যায়- নয়ন পাগলা খালি হাতে সেচেই পুকুরটা ভরে ফেললো। সেখানে এখন মার্কেট হয়েছে সকাল বিকাল বাত্তি জ্বলে রোজ।
আহ, কি সুন্দর লেখা। ছোট্ট একটা লেখা, কিন্তু গর্টাপ অনেক বছরের, অনেক দশকের, অনেক আনন্দের, অনেক বেদনার। খুবই ভালো লাগলো।
অসংখ্য কৃতজ্ঞতা। সব সময় ভালো থাকবেন 🙂
অনেক ধন্যবাদ,সবসময়ই ভালো থাকবেন।